বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ১১:০০ অপরাহ্ন

শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

শতবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

১২০৩ থেকে ১৭৫৭ সাল পর্যন্ত ৫৫৪ বছর মুসলমান শাসকরা বাংলা শাসন করেন। সুদীর্ঘ এই সময়ের মধ্যে বর্ণবাদী হিন্দুদের মনে সুপ্ত মুসলিমবিদ্বেষ প্রকাশ হয়নি। পলাশী যুদ্ধে ইংরেজদের সহযোগিতা করার মাধ্যমে বর্ণবাদী হিন্দুদের শত শত বছর ধরে পরম্পরায় অন্তরে পুষে রাখা মুসলিমবিদ্বেষের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।

দখলদার ব্রিটিশ ও তাদের সহযোগী হিন্দু নেতাদের মিলিত ষড়যন্ত্রের ফলে পলাশী যুদ্ধের ৫০ বছরের মধ্যে বাংলার মুসলিম জমিদাররা এবং সচ্ছল মুসলিম কৃষকসমাজ জমির মালিকানা হারিয়ে নব্য হিন্দু জমিদারদের অনুগ্রহের পাত্র হয়ে পড়ে। কৃষকরা পরিণত হয় ভ‚মিদাসে। ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ভাঙা কুঁড়েঘরে বসবাসকারী নিঃস্ব ও হতদরিদ্র ৯০ শতাংশ মুসলিম কৃষকের পরিধেয় বস্ত্র ছিল লেংটি ও গামছা। এরাই আমাদের হতভাগা পূর্বপুরুষ।

বাংলার মুসলমানদের এমন করুণ অবস্থায় খাজা পরিবারের ব্যবসায়ী খাজা হাফিজুল্লাহ পুঁজিসহ সিলেট থেকে এসে ঢাকায় ব্যবসায়-বাণিজ্য শুরু করেন। উপার্জিত অর্থ দিয়ে তিনি ময়মনসিংহের ইটনা পরগনা, ত্রিপুরা জেলাধীন বরদাখাত ও ফুলঝুরি এবং বরিশালে জমিদারি ক্রয় করেন। এই পরিবারের আরেক পুরুষ নবাব আবদুল গনী (১৮১৩-১৮৯৬) পারিবারিক জমিদারি আরো বিস্তৃত করেন। তিনি ঢাকার পলাশী, নীলক্ষেত ও শাহবাগে এবং তার পুত্র খাজা আহসানউল্লাহ (১৮৮৪-১৯০১) দিলখুশায় জমি কিনে খাজা এস্টেটের সাথে যুক্ত করেন। নবাব আবদুল গনী শাহবাগে ‘ইশরাত মঞ্জিল’ (১৯০৬ সালে যেখানে নিখিল ভারত মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা সভা হয়, বর্তমান মধুর ক্যান্টিন) নামে একটি বাগানবাড়ি ও চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠা করেন। বুড়িগঙ্গার তীরে মনোরম একটি প্রাসাদ খাজা আবদুল গনীর পিতা খাজা আলীমুল্লাহ ফরাসিদের কাছ থেকে কিনেছিলেন। ১৮৭২ সালে তা পুনর্নির্মাণ ও সংস্কার করে খাজা আবদুল গনী নিজ পুত্রের নামে প্রাসাদের নামকরণ করেন ‘আহসান মঞ্জিল’। নবাব আহসানউল্লাহর ইন্তেকালের পর তার জ্যেষ্ঠ পুত্র খাজা সলিমুল্লাহ (১৮৭১-১৯১৫) ১৯০১ সালে নবাব এবং খাজা এস্টেটের মোতাওয়াল্লি হন।

ব্রিটিশ সরকারের প্রস্তাবে ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলের জন্য নবাব সলিমুল্লাহ পলাশীতে জমি দান করেন। স্কুলটি পিতা নবাব আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল নামে নামকরণের জন্য তিনি ১৯০৮ সালে নগদ এক লাখ ২০ হাজার টাকাসহ আরো কিছু জমি দান করেন। পরে স্কুলটি কলেজে উন্নীত হয়। ১৯৬২ সালে কলেজটি পরিণত হয় পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। স্বাধীনতার পর যার নামকরণ হয় বুয়েট। খাজা এস্টেট ছাড়া পলাশীতে সেদিন অন্য কোনো ব্যক্তির কোনো জমি ছিল না। বর্তমান বুয়েট নির্মিত হয়েছে নবাব সলিমুল্লাহর দান করা খাজা এস্টেটের জমিতেই।

শাসন-শোষণের সুবিধা ও প্রশাসনিক প্রয়োজনে ব্রিটিশ সরকার বিশাল বাংলাকে ভাগ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ১৯০৫ সালের ২০ অক্টোবর তা কার্যকর করে গঠন করা হয় পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রদেশ। নতুন প্রদেশের তিন কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে এক কোটি ৮০ লাখ মুসলিম, এক কোটি ২০ লাখ হিন্দু ও অবশিষ্ট ১০ লাখ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী ও নৃগোষ্ঠীর মানুষ ছিলেন। নতুন প্রদেশের পশ্চাৎপদ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমরা বিভিন্নভাবে উন্নত হয়ে হিন্দুদের সমকক্ষ হয়ে দাঁড়াবে- এটা উপলব্ধি করেই বর্ণবাদী ও সাম্প্রদায়িক হিন্দুনেতা ও সমাজপতিরা বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে শোরগোল সৃষ্টি করেন। তাদের বিরোধিতার ব্যাপারে তফসিলি নেতা ‘ড. বি আর আম্বেদকার’ তার ‘পাকিস্তান অর পার্টিশন অব ইন্ডিয়া’ গ্রন্থের ১১ পৃষ্ঠায় বলেছেন, ‘বাংলা ভাগের ব্যাপারে হিন্দুদের এই বিরোধিতার মুখ্য কারণ হচ্ছে পূর্ব বাংলার মুসলমানদের তাদের ন্যায্য অংশ প্রাপ্তিতে বাধা দেয়া।’ সে সময় তাদের বঙ্গমাতার অঙ্গহানি মানি না নীতি যে ভণ্ডামি ছিল তা পরবর্তীতে ১৯৪৭ সালে অখণ্ড বাংলার প্রশ্নে বাংলা ভাগের পক্ষে থাকাই বড় প্রমাণ।

বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনে কলকাতার হিন্দুদের সম্পৃক্ত করতে ১৯০৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর কালীঘাটের কালীমন্দিরে পূজা দেয়া শেষে বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদ মিছিল হয়।

এই আন্দোলন স্বদেশী আন্দোলনে পরিণত হয় এবং পরিশেষে সূর্যসেনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনে রূপ নেয়। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন সম্পর্কে ‘বিমলানন্দ শাসমল’ তার ‘ভারত কি করে ভাগ হলো’ গ্রন্থের ২০ পৃষ্ঠায় বলেছেন, ‘বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন ছিল সন্দেহাতীতভাবে মুসলিমবিরোধী এবং গভীরভাবে মুসলমান স্বার্থের পরিপন্থী। এই আন্দোলনের তাগিদে যেসব সন্ত্রাসবাদী বিপ্লববাদী নেতা কর্মক্ষেত্রে প্রকাশিত হলেন তারা সবাই ছিলেন গভীরভাবে মুসলিমবিরোধী।’ বিমলানন্দের পর্যবেক্ষণে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন মুসলিমবিরোধী এবং সাম্প্রদায়িক।

ভারতীয় কংগ্রেস বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলন সমর্থন করলে তা সর্বভারতীয় রূপ পরিগ্রহ করে। অন্যদিকে নতুন প্রদেশের প্রতি ভারতের মুসলিম নেতাদের সমর্থন পাওয়ার জন্য নবাব সলিমুল্লাহ নিজ অর্থ ব্যয় করে ঢাকার শাহবাগে ইশরাত মঞ্জিলের খোলা ময়দানে ২৭-২৯ ডিসেম্বর, ১৯০৬ সালে আয়োজন করেন ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম এডুকেশন কনফারেন্স’-এর ২০তম অধিবেশনের। সর্বভারত থেকে আগত দুই হাজার প্রতিনিধি নতুন প্রদেশের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন। কংগ্রেসকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে পূর্বপরিকল্পনা মতে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বিশেষ অধিবেশনে নবাব সলিমুল্লাহর উত্থাপিত ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ’ গঠনের প্রস্তাব গৃহীত হয়।

সর্বভারতীয় হিন্দু নেতাদের অব্যাহত আন্দোলন ও চাপের কাছে নতিস্বীকার করে ব্রিটিশ সরকার। বিনিময়ে রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে স্থানান্তরের শর্তটি বাংলার হিন্দু নেতারা মেনে নিলে ব্রিটিশ রাজা পঞ্চম জর্জ ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর দিল্লির দরবার হলে বঙ্গভঙ্গ রহিত করেন। রাজধানীর বিনিময়ে বঙ্গভঙ্গ রহিত করার আনন্দে বর্ণবাদী হিন্দুরা উল্লসিত হলেও বাংলার মুসলমানরা ইংরেজ সরকারের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। এই ক্ষোভ যেন পরবর্তীতে ব্রিটিশবিরোধী লড়াইয়ে পরিণত হতে না পারে সেই উদ্দেশ্যে পূর্ববাংলার মুসলমানদের নেতা নবাব সলিমুল্লাহর সাথে আলোচনা করার জন্য ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ (১৯১০-১৯১৬) ১৯১২ সালের ২৯ জানুয়ারি তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসেন। সদ্য বিলুপ্ত হওয়া পূর্ববঙ্গ ও আসাম প্রাদেশিক মুসলিম লিগের সম্পাদক নবাব সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে আলোচনায় অংশ নেয়া ১৯ সদস্যের মুসলিম প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন ধনবাড়ীর জমিদার সৈয়দ নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ও এ কে ফজলুল হক। তারা কিছু দাবি লিখিত আকারে পেশ করেন। মুসলিম প্রতিনিধিদের কাছে ভাইসরয় লর্ড হার্ডিঞ্জ বঙ্গভঙ্গ বাতিলের ক্ষতিপূরণ স্বরূপ ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত জানান। ১৯০৬ সালের ১ অক্টোবর ‘হিজ হাইনেস দ্য আগা খানের’ নেতৃত্বে নবাব ভিকারুল মূলক, সৈয়দ নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী, এ কে ফজলুল হকসহ সর্বভারতের ৩৫ জন মুসলিম নেতা সিমলায় ভাইসরয় (১৯০৫) লর্ড দ্বিতীয় মিন্টোর সাথে সাক্ষাৎ করে যে পাঁচ দফা দাবি পেশ করেছিলেন তার শেষ দাবিটি ছিল- ‘মুসলিমদের ধর্মীয় ও বুদ্ধিগত জীবনের কেন্দ্র রূপে একটি মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা।’ এরপর ১৯০৬ সালের ডিসেম্বরের শাহবাগ সম্মেলনেও অনুরূপ দাবি করা হয়। এই দাবির ধারাবাহিকতায়ই ব্রিটিশ সরকার ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সরকারি ঘোষণার পর বর্ণবাদী হিন্দু নেতারা নতুন করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বাংলার চাষাভুষা মুসলমানদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন নেই দাবি করে ১৯১২ সালের ২ ফেব্রæয়ারি কলকাতার হিন্দু নেতারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরোধিতা করে বলেন, ‘এর ফলে বাঙালি জাতি বিভক্ত হয়ে পড়বে এবং তাদের মধ্যে বিরোধের তীব্রতা বৃদ্ধি পাবে।’ হিন্দু নেতারা ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায়, ১০ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জে ও ১১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরে প্রতিবাদ করেন। ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা উকিল লাইব্রেরিতে ত্রৈলোক্যনাথ বসুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভা হয়। ১৯১২ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারি ড. রাসবিহারী ঘোষের নেতৃত্বে একটি হিন্দু প্রতিনিধিদল লর্ড হার্ডিঞ্জের সাথে সাক্ষাৎ করে যে প্রতিবাদলিপি দেয় তাতে বলা হয়েছিল- ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হলে তা হবে অভ্যন্তরীণভাবে বঙ্গভঙ্গের সমতুল্য; তাছাড়া পূর্ববঙ্গের মুসলমানরা প্রধানত কৃষক তাই বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কোনো উপকারে আসবে না।’

১৯১২ সালের ২৮ মার্চ গড়ের মাঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই প্রতিবাদ সভা করার জন্য দুদিন আগে ২৬ মার্চ যে প্রস্তুতিসভা হয় তাতেও তিনিই সভাপতিত্ব করেন। [সূত্র : ইতিহাসের দিনলিপি (দ্বিতীয় খণ্ড, চতুর্থ পাঠ, কলকাতা-১৯৯৫) ড. নীরোদ বরন হাজরা, বঙ্গভঙ্গ থেকে বাংলাদেশ (পৃষ্ঠা-২০৭, ঢাকা, বাংলাদেশ) মুহাম্মদ আবদুল হান্নান, এক শ’ বছরের রাজনীতি (পৃষ্ঠা-৭১, ঢাকা-২০১০) আবুল আসাদ] মোদ্দাকথা, যে মানসিকতা নিয়ে বর্ণবাদী হিন্দু নেতারা বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করেন সেই একই মানসিকতায় তারা পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে অবতীর্ণ হন। হিন্দুদের বিরোধিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ঘোষণা যেন বাতিল না হয়ে যায় সে জন্য নবাব সলিমুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি দান করেন। নীলক্ষেত ও শাহবাগের যে এলাকাজুড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে উঠেছে তার সমুদয় জমি নবাব সলিমুল্লাহর দান করা খাজা এস্টেটের।

বঙ্গভঙ্গবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধীদের নেতৃত্ব দেন ১৯৪৬ সালে বাংলা ভাগের প্রস্তাবক হিন্দু মহাসভার নেতা শ্যামা প্রসাদ মুখার্জির পিতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. আশুতোষ মুখার্জী। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে মক্কা বিশ্ববিদ্যালয় বলে ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকার গড়িমসি করতে থাকলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন কমিটির অন্যতম সদস্য সৈয়দ নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী ও নবাব সলিমুল্লাহর মানসপুত্র নামে পরিচিত শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের অব্যাহত তৎপরতার কারণে অবশেষে ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়।

ঢাকার কতিপয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যতীত পূর্ববঙ্গের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে- হিন্দু নেতাদের এই শেষ দাবিটি ব্রিটিশ সরকার মেনে নেয়ার পর তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা বন্ধ করে। ফলে সব ডিগ্রি দেয়ার ক্ষমতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর ন্যস্ত করা হয়। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট ভারত বিভক্ত হওয়ার পর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের খবরদারি ও নিয়ন্ত্রণ থেকে পূর্ববঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থা স্বাধীনতা লাভ করে।

আজ পয়লা জুলাই, ২০২১ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রতিষ্ঠার এক শ’ বছর পার করল। সব বিরোধিতা, বৈরিতা এবং প্রতিক‚লতা অতিক্রম করে যারা বাংলার চাষাভুষা মুসলমানদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে তাদের মধ্যে জমিদাতা নবাব সলিমুল্লাহ এবং তার মৃত্যুর পর সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ও শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক অন্যতম। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকাটাই হবে জাতির জন্য গৌরবের।

লেখক : সদস্য, স্থায়ী কমিটি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877